১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধের পর প্রকৃতপক্ষে ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন জারি হয় এবং এদেশের ওপর নেমে আসে পরাধীনতার যাঁতাকল । সেই অবধি ব্রিটিশের কঠোর শাসনের নাগপাশ থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্মলাভ ঘটে। যে আশা- আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পূর্ব বাংলার মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে একসঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের নিমিত্তে একটি রাষ্ট্র গড়ার ক্ষেত্রে সংগ্রাম করেছিল, তা মাত্র এক-দুই বছরের মধ্যেই মিথ্যায় পরিণত হয়। সে কারণে প্রথমে স্বাধিকার আন্দোলন এবং অনিবার্যকারণে তা স্বাধীনতা সংগ্রামে রূপ নেয় । তার ফলশ্রুতিতে বহু বছরের প্রত্যাশিত ‘স্বাধীনতা' ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ সত্যে পরিণত হয় এবং পৃথিবীর মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ নামে একটি রাষ্ট্র জন্মলাভ করে ।
অতি সংক্ষিপ্ত আকারে যে বক্তব্য প্রদান করা হলো তা এত সহজে অর্জিত হয়নি। এজন্য বহু মনীষী অসামান্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, দিয়েছেন অগণিত সংগ্রামী মানুষ জান, মাল, ইজ্জত। এসব বিপ্লবীর কথা বহুজনে লিখেছেন। আসলেই তাঁদের কথা কোনো সময়ে লিখে শেষ করা যাবে না। এঁদের মধ্যে থেকে যাঁদের ভূমিকা ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে আছে, তাঁদের ক'জন বরণীয় ব্যক্তি সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত করা হলো। এই মানবকুল শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিরা দেশ-সমাজ ও সাধারণ মানুষের জন্য যে ত্যাগের মহিমা স্থাপন করেছেন, তার অল্প কিছু পাঠক সমাজের কাছে তুলে ধরার জন্য এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। এসব বিশাল মাপের ব্যক্তি কেবল দেশের জন্য ত্যাগই করেননি, রেখে গেছেন মহান আদর্শ। আজকের যুগে রাজনীতির এই অবক্ষয়ের মাঝে তাঁদের রাজনীতির ধারা, প্রকৃতি, আদর্শ, সহমর্মিতার মনোভাব, নৈতিকতার মানদণ্ড, সহনশীলতা, সরলতা প্রভৃতি চর্চার বিশেষ প্রয়োজন আছে বলে মনে করি। তাঁদের জীবনী পাঠ করে আজকের যুগের রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, শিক্ষক প্রমুখ দীক্ষা গ্রহণ করবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস ।