পিতা-মাতার তিরোধানের পর থেকে হতাশায় বিহ্বল, স্পন্দনহীন হয়ে অনিদ্রায় কেটেছে প্রায় দুইটি বছর। বড় ভাই বাবার মতো খুব স্নেহ করতেন, ভাবীও অনেকটা মায়ের মতো সুখ-দুঃখের অংশীদার হতেন। ছোট ভাইদের অতি প্রিয় ছিলাম, এখনো আছি। বিশেষ করে ছোট বোন শাহানা পারভিন আমাকে কবিতা লিখতে অনুপ্রেরণা দেয়। আমার পরিবারের সদস্যদের প্রবল উৎসাহে ধীরে ধীরে নিজকে কাব্যচর্চায় নিয়োজিত করি। আমি তাদের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বুকের মাঝে ধূসর বেদনার আর্তচিৎকার অনুভব করেছি প্রতিদিন। দুর্বিষহ যন্ত্রণার করাল গ্রাসে যখন হারিয়ে যাচ্ছিলাম ঠিক তখনি এসে পাশে দাঁড়ালেন বন্ধু এবং প্রিয় স্বামী কবি জেবু নজরুল ইসলাম। তিনি আমার কবিতাগুলো ভুলত্র“টি সংশোধন, প্রতিশব্দ স্থাপন সহ প্রথম প্রকাশনায় চূড়ান্ত কবিতা নির্বাচনে রাত জেগে জেগে কাজ করে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছেন। তিনি অসাধারণ প্রজ্ঞা ও প্রতিভার অধিকারী, তার অসামান্য মহত্ত্ব আর অনুপমেয় অবদানের জন্যে আমার হৃদয়ে চিরভাস্বর হয়ে থাকবেন চিরদিন। আমার শ্রদ্ধাভাজন জ্যেষ্ঠ কবি এবং কাব্য প্রেমিকদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করে দুটি কথা বলব। আমি জন্মগত ভাবে কবি নই। এমনকি অসাধারণ সাধনা বা প্রচেষ্টায় বিকশিত কোন কবি নই। নিদারুণ মানসিক যন্ত্রণা থেকে আমার কাব্যচর্চা শুরু হয়। মূলত চিরবিরহ থেকে আমার কবিতার উৎপত্তি। আমার কবিতার একটি শব্দও যদি কোন কাব্যপ্রেমিকের হৃদয় ছুঁয়ে যায় তখনি পূর্ণতা পাবে আমার কবিতা লেখার সার্থকতা।
পারিবারিক নাম : রোমানা আক্তার লায়লা। কাব্য জগতের নাম : লাবণী লায়লা। জন্ম : ১১ নভেম্বর। ভদ্রাসন ইউনিয়ন, উপজেলা- শিবচর, জেলা- মাদারিপুর। পিতা : মরহুম সোনামুদ্দীন ব্যাপারী। মাতা : মরহুমা রাজিয়া বেগম। শিক্ষা : ভদ্রাসন প্রাইমারী হাই স্কুল, নুরুল আমীন বিশ্ববিদ্যালয় (উমেদপুর, উপজেলা : শিবচর) থেকে ইন্টারমেডিয়েট পাশ করে ডিগ্রীতে দুই বছর লেখাপড়া করেন তবে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দেয়া হয়নি। পদ্মা নদীর প্রাণোচ্ছলতা দেখে মুগ্ধ হতে হতে একসময় বড় হয়ে গেলেন তিনি। সেই ছোটবেলা থেকে কবিতা, গল্প, আর সংগীতের প্রতি বিশেষ আগ্রহ ছিল। মনে মনে সব সময় ছন্দ মিলাতে চেষ্টা করতেন, নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দের কবিতা তাকে কাছে টানতো খুব বেশি। কিন্তু গ্রামে থাকার কারণে লেখার সুযোগ হয়ে উঠেনি। অনলাইনের মাধ্যমে কাব্যচর্চা শুরু করেন। পাঠকদের প্রবল উৎসাহ আর প্রেরণায় আধুনিক কাব্য লিখতে আরম্ভ করেন। ফেইসবুকে বন্ধুদের আর স্বামী কবি জেবু নজরুল ইসলামের অনুপমেয় অনুপ্রেরণায় অবশেষে ‘শুভ্র পুঞ্জ মেঘমালা’ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করার পথকে সুগম করে দেয়।