"প্রাচীন মিশরীয় সাহিত্য" বইয়ের পেছনের কভারে লেখা:মিশর মানেই নীল নদ, পিরামিড আর স্ফিংসের দেশ; আরব বসন্ত যতােই ছুঁয়ে যাক বা না-যাক, মুছে যায় নি ইতিহাসের খিলান-গম্বুজ-পাটাতন। খ্রিস্টপূর্ব যুগের প্রায় চার-পাঁচ হাজার বছরের পুরনাে এই সভ্যতাকে মানুষ পড়ে যাচ্ছে যুগের পর যুগ ধরে। তবু ফুরিয়ে যায় নি পিপাসা। আমরা পিরামিড ও স্ফিংস চিনি, তুতেনখামেন ও নেফেরতিতিকে জানি, নীল নদ আর হিয়েরােগ্লিফ চিনি, প্রাচীন মিশরের সাহিত্যবস্তু অতােটা কি চিনি? এ-কথা সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায় যে, আধুনিক পৃথিবীর অনেক সাহিত্যিক প্রকরণের সঙ্গেই মিশরীয় রচনাসমূহের সাদৃশ্য আছে; তারা লিখেছে স্ত্রোত্রকবিতা, গীতিকবিতা, নীতিকবিতা, আখ্যানধর্মী কবিতা ও গল্প। তবে মিশরীয় সাহিত্যের মূল অবলম্বন পদ্য। সমাধিফলকে লেখা রচনাগুলাে মনে করিয়ে দেয় এপিটাফের কথা সূর্য, রাজা, নদী, দেবতাবিষয়ক প্রশস্তিগুলাে স্রোত্ৰকবিতারই প্রাচীন রূপ। প্রণয়ের আকুতিমাখা প্রেমের গান বা কবিতাগুলােতে আছে চিরায়ত গীতিকবিতার লক্ষণ। গ্রিক-রােমানদের মতাে মহােত্তম এপিক নেই সত্য, কিন্তু এপিক-স্বভাবী কাব্য আছে। কালের ধাক্কা সয়ে প্রাচীন মিশরের যতােখানি সাহিত্য আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে ততােটুকু পড়ে বুঝতে বাকি থাকে না যে, সে কালের মানুষ ঘাের বিস্ময় নিয়ে তাকিয়েছিলেন মানুষের জীবন ও মৃত্যুর দিকে, জগতকে বুঝতে চেয়েছিলেন স্বাভাবিক কৌতুহল নিয়ে; তারই ভেতর লুকিয়ে আছে প্রাচীন মানুষের প্রজ্ঞা ও অন্তদৃষ্টি।
সুমন সাজ্জাদ কবি ও গদ্যকার। জন্ম ৮ মে ১৯৮০, বিষ্ণুপুর, পুর। পড়েছেন শেরপুর সরকারি ভিক্টোরিয়া একাডেমী, শেরপুর সরকারি কলেজ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। পেশায় শিক্ষক। কর্মস্থল: বাংলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। প্রকাশিত বই ৫টি। কবিতা: পতনের শব্দগুলো (২০০৭), ইল্ক (২০১৪), নীলকণ্ঠের পালা (২০১৪); প্রবন্ধ : প্রকৃতি, প্রান্তিকতা ও জাতিসত্তার সাহিত্য (২০১১); রম্যগদ্য: রসেবশে বারো মাস (২০১৫)। ২০১১-তে পেয়েছেন 'এইচএসবিসি-কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার'।