পালি ভাষা একটি সমৃদ্ধ সাহিত্যের ভাষা। এ ভাষায় রচিত গ্রন্থসমূহ ‘পালি সাহিত্য নামে পরিচিত। থেরবাদী বৌদ্ধদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ ত্রিপিটক সংকলনের মধ্য দিয়ে পালি ভাষা সাহিত্যের ভাষা হিসেবে স্থান ও মর্যাদা লাভ করে। পালি ভাষার উদ্ভব স্থল ভারত হলেও এ ভাষার চর্চা ও অনুশীলন ভারতের সীমারেখা অতিক্রম করে শ্রীলংকা, বার্মা ,মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, কম্বােডিয়া, লাউস প্রভৃতি দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং উপযুক্ত দেশসমূহে মাতৃভাষার পাশাপাশি ধর্ম-দর্শন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম বাহন হিসেবে এ ভাষাটি স্থান করে নেয়। ত্রিপিটক সংকলিত হওয়ার পর কালক্রমে এ ভাষায় অট্ঠকথা বা ভাষ্য, টীকা-অনুটীকা, ঐতিহাসিক আকর গ্রন্থ, কাব্য গ্রন্থ, গল্পগ্রন্থ, দার্শনিক গ্রন্থ, তর্কশাস্ত্র, নীতিশাস্ত্র, অলঙ্কার শাস্ত্র, অধিবিদ্যা, ব্যাকরণ, শব্দকোষ প্রভৃতি নানা শ্রেণির গ্রন্থ রচিত হলে পালি সাহিত্য বৈচিত্র্যময় রূপ পরিগ্রহ করে এবং পালি ভাষা সমৃদ্ধ সাহিত্যের ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। কিন্তু ভারতের কোন্ অঞ্চলে এ ভাষাটির উৎপত্তি হয়েছিল, কিভাবে বা কেন এ ভাষাটির নামকরণ ‘পালি’ হয়েছিল, ভাষাটির সময়কাল, ‘পালি’ শব্দের ব্যুৎপত্তি ও অর্থ প্রভৃতি বিষয় কুয়াশাচ্ছন্ন। গবেষকগণ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে উপযুক্ত বিষয়ে বিরাজমান সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন।
Dr.Dilip Kumar Barua, জন্ম (৩১ ডিসেম্বর ১৯৬৭) চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনীয়া থানার শিলক গ্রামে। পিতা নিরোদ বরন বড়–য়া, মাতা পারিকা বড়–য়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে বি.এ সম্মান ও এম.এ ডিগ্রি লাভ; ১৯৯৫ সালে সংস্কৃত ও পালি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান; ২০০০ সালে জাপানের আইচি গাকুইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন এবং ২০০২ সালে জাপান সরকারের জেএসপিএস স্কলারশিপে পোস্ট-ডক্টরেট গবেষণা সমাপ্ত করেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ : বৌদ্ধধর্ম (১৯৯৭), উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়; Syncretism in Bangladeshi Buddhism (2002), Nagoya, Japan; গন্ধবংস (২০০৫), আজকাল প্রকাশনী, ঢাকা; বৌদ্ধরঞ্জিকা (২০০৫), নবযুগ প্রকাশনী, ঢাকা; সদ্ধম্ম-সংগহো (২০০৭), পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; কীর্তিমান বৌদ্ধ সাহিত্যিক ও দার্শনিক (২০০৮), পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; বুদ্ধঘোসুপ্পত্তি (২০০৮), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থা, ঢাকা এবং পালি ভাষার ইতিবৃত্ত (২০১০), বাংলা একাডেমী, ঢাকা। এছাড়াও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গবেষণা জার্নালে ডক্টর বড়–য়ার ৩৫টির অধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি জাপান, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভারতে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে যোগদান ও গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত।