হাই স্কুল পড়ুয়া মেয়ে মিৎসুহার মনে গভীরে লালিত স্বপ্ন—একদিন সে আধুনিক সভ্যতা থেকে দূরে অবস্থিত, পাহাড়ে ঘেরা ছোট্ট শহরটি ছেড়ে পারি জমাবে স্বপ্নের শহর টোকিওতে, যেখানে জীবনযাত্রার মান এই মফঃস্বল থেকে অনেক অনেক গুন বেশি উন্নত। কিন্তু এই স্বপ্নের বাইরেও ঘুমের মধ্যে একটা অদ্ভুত স্বপ্ন প্রায়শ তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাকে। একেবারেই বাস্তবতার স্বাদ রেখে যাওয়া স্বপ্নটিতে নিজেকে আবিষ্কার করে টোকিওতে বসবাসকারী হাই স্কুল পড়ুয়া এক বালকের চরিত্রে! তার কাছে কোনোভাবেই এটিকে নিছক ঘুমের ঘোরে দেখা কোনো স্বপ্ন বলে মনে হয় না, বরং সবটাই বাস্তব বলে মনে হয়!
অন্যদিকে, প্রায় একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে টোকিওর বাসিন্দা, হাই স্কুল পড়ুয়া এক ছেলেকে; নাম--তাকি। সেও নিয়মিত তাড়া খেয়ে বেড়াচ্ছে এক অদ্ভুত স্বপ্নের! নিজেকে আবিষ্কার করছে পাহাড় বেষ্টিত, আধুনিক সভ্যতা থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন, একেবারেই অপরিচিত ছোট্ট একটা মফঃস্বল শহরে বসবাসরত মেয়ের চরিত্রে!
ক্রমে রহস্যজনক স্বপ্নটির কারণে তাদের দুজনের জীবনের স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্থ হতে শুরু করলো। সেই সাথে ঘটতে থাকা অদ্ভুত সব ঘটনা ঘনীভূত করতে শুরু করলো দৈনন্দিন জীবনকে। যত দিন যেতে লাগলো পুরো ব্যাপারটা যেন আরও বেশি করে জট পাকাতে আরম্ভ করলো! ব্যাখ্যাতীত স্বপ্নটি ধীরে ধীরে শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করলো দুজন অপরিচিত ছেলে ও মেয়ের জীবনে!
এই অদ্ভুত স্বপ্নের পেছনে কী এমন রহস্য লুকিয়ে আছে? এরমধ্যে কী এমন পূর্বাভাস বা পুরোভাস লুকিয়ে আছে? নিয়তি কি সত্যিই কোনো খেলা খেলছে, যে খেলায় তাদের দুজনেরই ভাগ্যলিপি এক সুতোয় গাঁথা!?
মাকোতো শিনকাইয়ের জন্ম ১৯৭৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। একাধারে তিনি একজন অ্যানিমে ডিরেক্টর, সিনেমাটোগ্রাফার, লেখক, প্রডিউসার, মাঙ্গা আর্টিস্ট। এছাড়া অ্যানিমেতে কণ্ঠও দিয়েছেন। কাজ করেছেন গ্রাফিক ডিজাইনার হিসাবে। টোকিও শহরে অবস্থিত চুও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাপানি সাহিত্যের ওপর স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
অ্যানিমে’র জন্য জাপানিদের কাছে তিনি “নব্য হায়াও মিয়াজাকি” হিসাবে স্বীকৃত। ‘ইয়োর নেম’, ‘ফাইভ সেন্টিমিটারস পার সেকেন্ড’, ‘গার্ডেন অব ওয়ার্ডস’, ‘ওয়েদারিং উইথ ইউ’, ‘সুজুমে’--তাঁর আলোচিত সৃষ্টিকর্ম, যেগুলো উপন্যাস ও অ্যানিমে উভয় ক্ষেত্রেই বেশ সফল। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ জিতেছেন ‘টোকিও ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল অ্যাওয়ার্ড’, ‘নিক্কান স্পোর্টস ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড’, ‘জাপান মুভি ক্রিটিক্স অ্যাওয়াড’সহ আরও কিছু পুরস্কার।
স্ত্রী চিয়েকো মিসাকা এবং কন্যা চিসে নিৎসু সাথে তিনি টোকিওতে বসবাস করছেন।