"ভালোবাসা ও বিদ্বেষ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: মানুষের মন কখন কী চায়, সেটা শুধু যার মন সে জানে। মনের ইচ্ছেগুলাে নিয়ন্ত্রণ করে পরিপার্শ্বের বাস্তবতা। সেই রূঢ় বাস্তবতার ভারে অজস্র অবদমিত ইচ্ছে ছদ্মবেশে ফিরে এসে বাস্তবতাকেই আবার আঘাত হানতে চায়। তখন চেনা-অচেনার মিশেলে জটিল হয়ে ওঠে তার রূপ। বাস্তবতারও আছে ছদ্মবেশ। আপাত সরলতার নিচেই খেলা করে জটিল সমীকরণ। সেখানে ধনী-গরিব, নারীপুরুষ, শুভ-অশুভের দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বের অভিঘাত পড়ে মানুষের মনে, আচরণে। সমাজের ‘নিচু তলার মানুষগুলাের মনও এর বাইরে নয়। ওদেরও আছে সুখ-দুখ, আনন্দ-বেদনা, প্রেমঅপ্রেমের অনুভূতি। যদিও বাস্তবে সুখের মুখ ওদের দেখা হয়ে ওঠে না সহসা। মন তখন মরিয়া হয়ে ওঠে, একটু সুখ একটু আনন্দের প্রত্যাশায়; কেউ কেউ হয়ে। ওঠে দুঃসাহসী। এ উপন্যাসে সমাজের সেইসব ‘নিচুর চেয়ে নিচু মানুষগুলাের মনােজাগতিক বাস্তবতা স্বচ্ছ জলে প্রতিচ্ছবির মতাে বিম্বিত হয়েছে। ‘ভালােবাসা ও বিদ্বেষ’ উপন্যাসটি সম্পকে ড. রফিকউল্লাহ খান তাঁর শতবর্ষের বাংলা উপন্যাস’ গ্রন্থে বলেছেন, জীবনের রূপ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জীবন। অবলােকনের অভিরুচিও ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়েছে। অভিরুচির এই বিবর্তনের পরিচয় পাওয়া যায় নকিব ফিরােজের ‘ভালােবাসা ও বিদ্বেষ' উপন্যাসে। নকিব ফিরােজের অনিষ্ট গ্রামীণ মানুষের জটিল অন্তর্জগত। আর্থউৎপাদন কাঠামাের পরিবর্তন প্রক্রিয়া মানুষের মনকে যে জলিলতা আক্রান্ত করেছে, আহাদ আলী ও রশােনা তার প্রমাণ।