তাফসীরে মা'আরিফুল কুরআন একটি চিন্তাশীল, সহজবোধ্য এবং ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য তাফসীর গ্রন্থ, যা সাধারণ পাঠক থেকে শুরু করে গবেষক ও আলেমদের জন্য সমানভাবে উপযোগী।
? সংক্ষিপ্ত রিভিউ: তাফসীরে মা'আরিফুল কুরআন
রচয়িতা: হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শফী (রহ.), একজন প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ও আলেম।
মূল ভাষা: উর্দুতে রচিত, পরবর্তীতে বাংলা সহ বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
ধরন: এটি একটি আয়াতভিত্তিক ব্যাখ্যামূলক তাফসীর, যেখানে প্রতিটি আয়াতের ভাষাগত বিশ্লেষণ, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং ব্যবহারিক শিক্ষা তুলে ধরা হয়েছে।
বিশেষত্ব:
সহজ ভাষা ও গভীর চিন্তা: সাধারণ পাঠকের জন্য সহজবোধ্য, আবার গবেষকদের জন্য চিন্তাশীল বিশ্লেষণ।
ফিকহ ও আকীদার দিকনির্দেশনা: আয়াতের ব্যাখ্যার পাশাপাশি ইসলামী আইন ও বিশ্বাসের দিকগুলোও সুন্দরভাবে উপস্থাপিত।
আধুনিক প্রসঙ্গের আলোকে ব্যাখ্যা: সমসাময়িক সমস্যার প্রেক্ষিতে আয়াতের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরা হয়েছে।
প্রকাশনা ও কাগজ: অফসেট ক্রিম কালার কাগজে ছাপা হওয়ায় চোখের আরামদায়ক পাঠ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
পাঠক প্রতিক্রিয়া: বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমদের মধ্যে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়, বিশেষ করে যারা গভীরভাবে কুরআন অধ্যয়ন করতে চান।
এই তাফসীরটি কেবল ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের মাধ্যম নয়, বরং চিন্তাশীল মুসলিম জীবনের দিকনির্দেশনা হিসেবেও কাজ করে। যারা কুরআনের গভীরতা ও প্রাসঙ্গিকতা অনুধাবন করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি অপরিহার্য গ্রন্থ।
মুফতী মুহাম্মাদ শফী (উর্দূ: مفتى محمد شفيع) ১৩১৪ হিজরী সনের শা'বান মাসের ২১ তারিখে (২৫ জানুয়ারি ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দ) জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর নাম "মুহাম্মাদ শফী" হযরত রশীদ আহমাদ গাঙ্গুহী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) কর্তৃক প্রস্তাবিত। ১৩২৫ হিজরীতে (১৯০৭/১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে) তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন । তিনি ১৩৩৬ হিজরীতে (১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দ) দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন, তখন তার বয়স ২১ বছর ছিল। এরপর ১৩৩৭ হিজরীতে (১৯১৮/১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দ) তিনি দারুল উলূম দেওবন্দের প্রাথমিক শ্রেণীর শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি খুবই তাড়াতাড়ি উচ্চতর শ্রেণীর শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৩৫০ হিজরী সনে (১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দ) দারুল উলূম দেওবন্দের মুফতীয়ে আযম বা প্রধান মুফতী (গ্রন্ড মুফতী) নিযুক্ত হন। দেশ বিভাগের পর তিনি তাঁর পিতৃভূমি দেওবন্দ ছেড়ে পাকিস্তান চলে আসেন। তিনি ১৩৭০ হিজরীতে (১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দ) পাকিস্তানে দারুল উলুম করাচী প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় দেড়শত এর মত বই লেখেছেন। তার বিশ্বখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ "মা'আরিফুল কুরআন" যা বহুল ভাষায় অনুবাদ হয়েছে যা তিনি সমাপ্ত করেন (ঊর্দূতে) তার ইন্তেকালের চার বছর আগে। এই আলেমে দ্বীন ও মনীষী ১৩৯৬ হিজরী সনের শাওয়াল মাসের ১০ তারিখে ইন্তেকাল করেন।[১][২]