কাক ডাকা ভোরে ব্যাগপ্যাক কাঁধে ঝুলিয়ে ছয় গোয়েন্দা বেরিয়ে পড়লো। উদ্দেশ্য, চার খুনের রহস্য উদঘাটন করা। নিতিন, অধরা, জয়ী ও আবেশ নামক চার গোয়েন্দার চেহারায় অনুসন্ধানী ভাব থাকলেও বাকি দুই গোয়েন্দা জিনিয়া ও সীমান্তের মুখে অনুসন্ধানী ভাবের লেশমাত্র নেই। তার পরিবর্তে চেহারা ভর্তি বিচ্ছিন্নতার আভাস আর ঝাপসা চোখের বারান্দায় উপচে পড়া অশ্রুদের ভিড় লক্ষণীয়। . তাদের চেহারা দেখেই আন্দাজ করা যায়, দুটো অন্তরের অন্তঃস্থল জুড়ে কষ্টের উপস্থিতি। সেই কষ্টকে প্রকাশ করার একমাত্র মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে দীর্ঘশ্বাসকে। তাদের এই দীর্ঘশ্বাসের পিছনের কারণটা খুবই করুণ। তারা যেই খুনদ্বয়ের রহস্য উদঘাটন করতে যাচ্ছে, সেই খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলো তাদেরই জমজ সন্তান আর বাবা-মা। প্রিয়জনের বিচ্ছিন্নতা-ই তাদের দীর্ঘশ্বাস আর অনুসন্ধানী পথযাত্রার কারণ। . ছয়টি চরিত্র নিয়ে গঠিত হয়েছে 'তারা ছয়জন' নামক গোয়েন্দা উপন্যাস। যাতে রহস্যের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে প্রেম, বাস্তবতা ও রম্যতা। নিতিন, অধরা, আবেশ, জয়ী, জিনিয়া ও সীমান্ত, এই ছয় গোয়েন্দা বিভিন্ন বেশে নিজেদের উপস্থাপন করতে দেখা যায় এই উপন্যাসে। . তারা কখনো ভাবুক হয়েছে, তো কখনো নিজেদের আড়াল করে বেশ নিয়েছে ছদ্মে। কখনো বা আবার গভীর রহস্যের মাঝে নিজেদের রম্য চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করেছে। কখনো ক্লান্ত প্রহরে মনের কোণে উঁকি দেওয়া প্রেমময় অনুভূতিকে সায় দিয়েছে নির্দ্বিধায়। নিজেদেরকে গভীর রহস্যজালে ডুবিয়ে, বের করে এনেছে রহস্যঝটের সমাধান। চলুন, সেই চঞ্চল্যকর চার খুনের রহস্য উন্মোচনের গা শিওরে উঠা কাহিনি জেনে নিই ‘তারা ছয়জন’ গোয়েন্দা উপন্যাস থেকে।
লেখক আফিয়া খোন্দকার। ডাকনাম আপ্পিতা। তিনি ২০০০ সালের ৩০শে মার্চ সম্ভ্রান্ত খোন্দকার বংশে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোসলেহ উদ্দিন খোন্দকার এবং মাতা তাহমিনা আক্তার। তিনি বাবা-মায়ের জমজ কন্যার একজনা। পৈত্রিক নিবাস-মির্জাপুরে। সাহিত্যের প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল ছোটোবেলা থেকেই। বুঝতে শেখার পর থেকে বই তুলে নিয়েছিলেন হাতে। বইয়ের প্রতি নেশাটা লেখিলিখিতে রূপ নিয়েছে কৈশোরের সমাপ্তে এসে। বাস্তবতা এবং কল্পনার সংমিশ্রণে ভেতরকার শব্দগুলোকে গল্পাকারে রূপ দিতে থাকেন পড়াশোনার পাশাপাশি। ২০২১ সালে তাঁর লেখা প্রথম বইয়ের পাতায় আসে। রোমান্টিক থ্রিলার জনরায় লেখা বইটির নাম 'তারা ছয়জন।' ২০২২সালে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় বই। পাঁচ জনরার সাত গল্পের সংমিশে রচিত গল্পসংকলনের নাম, ‘সরোবরে পুষ্প ভাসে।’ ২০২৪ সালে প্রকাশ পায় তার তৃতীয় পাঠকপ্রিয় উপন্যাস ‘পিঞ্জর’। ভিন্ন জনরার ভিন্ন ভিন্ন লেখা দিয়ে তিনি পাঠকমহলে নিজের স্থান অর্জন করেছেন। অনবদ্য লেখার মাধ্যমে ছুঁয়েছেন হাজারো পাঠকের হৃদয়ে।