হাজার বছরের ইতিহাস বিচার করে দেখা যায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম কখনো এদেশীয় মানুষের দ্বারা শাসিত হয়নি। আরাকান, ত্রিপুরা, পাঠান, মোগল, ইংরেজ, পাকিস্তান সবগুলোই ছিল বিদেশী শক্তি। চট্টগ্রামের ভৌগলিক অবস্থানের জন্য বাংলাদেশের বাকী অংশের চেয়ে এখানকার ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর চরিত্র আলাদা। চট্টগ্রামকে যারা উপনিবেশ করতে চেয়েছে তাদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যও ছিল আলাদা। পৃথিবীতে যখন ইউরোপীয়ান উপনিবেশবাদ শাখা প্রশাখা বিস্তার করতে শুরু করেছিল চট্টগ্রামেও তার হাওয়া এসে পড়েছিল সূচনাতেই। যে বর্তমানের উপর চট্টগ্রাম দাঁড়িয়ে আছে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পটপরিবর্তনগুলো ঘটেছে গত পাঁচ শতাব্দীতে। কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কার কিংবা ভাস্কো দা গামার ভারতের জলপথ আবিষ্কারের ঘটনাগুলোর প্রভাব এই গাঙ্গেয় মোহনা অঞ্চলের মধ্যে নিশ্চিতভাবেই চট্টগ্রামে সবার আগে এসেছে । মূল কারণটি ছিল বাংলার বিপুল সম্পদ ও সম্ভাবনাকে স্পর্শ করা। আদিকাল থেকে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত চট্টগ্রামই ছিল বাংলার প্রধান প্রবেশদ্বার।
প্রচলিত ইতিহাস গ্রন্থে তথ্যের পর তথ্য সাজানো থাকে। শুধু তথ্য দিয়ে জ্ঞানভাণ্ডার পূর্ন হয় ঠিকই কিন্তু প্রাণের সাথে যোগাযোগ তৈরী হয় না। ইতিহাসের নানান বাঁকে মোড় ফেরানো কিছু গল্প থাকে। সেই গল্পগুলো প্রচলিত ইতিহাস গ্রন্থে অনুপস্থিত কিংবা খুব তুচ্ছ করে প্রকাশিত। অথচ সেইসব গল্পের ভূমিকা ইতিহাসের পালাবদলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। উপনিবেশ চট্টগ্রামে সেই গল্পগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে সাজানো হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের নীরসতা থেকে ইতিহাসকে মুক্ত করে সহজবোধ্যতার আনন্দ ছড়িয়ে দেবার চেষ্টা - 'উপনিবেশ চট্টগ্রাম'।
জন্ম ১৯৬৯। নিবাস চট্টগ্রাম। পড়াশোনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। পেশায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরামর্শক। ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রাচীন সভ্যতা নিয়ে লেখালেখি করেন। প্রকাশিত গ্রন্থ: ১) International Trade Management (Amazon, 2020), ২) উপনিবেশ চট্টগ্রাম (পূর্বস্বর, ২০২১) ৩. Secret Journey of Sarat Chandra Das(Amazon, 2022), ৪. Global Trade Orbit (Amazon, 2023) ৫. থাংলিয়ানা (কথাপ্রকাশ, ২০২৪), ৬. শরচ্চন্দ্র দাস: নিষিদ্ধ তিব্বতে প্রথম বাঙালি (বাতিঘর, ২০২৪) ৭. স্ক্যান্ডাল অব দ্য সেঞ্চুরি- সাংবাদিক মার্কেজের বিচিত্র অভিজ্ঞতার সংকলন (চন্দ্রবিন্দু, ২০২৫) ৮. চিৎ-তৌৎ-গং- চেনা চট্টগ্রামের অচেনা ইতিহাস (কথাপ্রকাশ, ২০২৫) ৯. বিলেতে প্রথম বাঙালি বণিক - শেখ দীন মোহাম্মদ (বাতিঘর,২০২৫)