সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার যিনি কুরআন নাযিল করেছেন এবং কুরআনকে মানব জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা সাব্যস্ত করেছেন। যা পরিপূর্ণ আলো, আলোর দিশারী। যা নিকশকালো আঁধারের মাঝে আলোর ফোয়ারা। পথহারা মানুষের জন্য সঠিক পথনির্দেশিকা। দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মানুষের দুশ্চিন্তা দূরকারী। অভাবী ব্যক্তির অভাব মোচনকারী। ধনীদের সম্পদ পবিত্রকারী। দুঃখীদের দুঃখ বিদূরিতকারী। এক কথায় মানব জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইনসাফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী। সকল সমস্যার সমাধানকারী। যারা তাঁকে সামনে রাখবে, তারা সম্মানিত হবে। যারা তাঁকে পশ্চাদে ফেলবে, তারা লাঞ্ছিত হবে। প্রত্যেকে তার মানা-না মানার অবস্থা অনুপাতে ফল ভোগ করবে। কিন্তু এর জন্য আগে জানতে হবে। জানার পরিধি বাড়াতে হবে। সঠিক বিষয় বিস্তারিতভাবে জানতে হবে যদিও বিষয়বস্তু হাতেগোনা কয়েকটা হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই অধমের এই যৎসামান্য প্রচেষ্টা ‘এ পথেই সুখের ছোঁয়া'।
দীর্ঘদিন যাবত কুরআন-হাদীসের পথ ধরে উম্মতের কিছু খেদমত করার ইচ্ছা অনুভব করছিলাম। হৃদয়ের এই প্রচণ্ড আগ্রহের কথা আমার মুরুব্বি ইবনে শাইখুল হাদীস আলহাজ হযরত মাওলানা মাহবুবুল হক্ব (দা. বা.)-এর কাছে প্রকাশ করলাম। তিনি অনুমতি দিলেন। আমি পিপাসা নিয়ে কাজ শুরু করলাম । এবং আল্লাহর অশেষ কৃপায় বর্তমানে কিতাবটি পাঠকের হাতে। কিতাবটিকে আমি পাঁচটি অধ্যায়ে সাজিয়েছি। (১) কতিপয় আয়াত। (২) কতিপয় হাদীস। (৩) কুরআন কারীমের ফযীলত ও ফযীলতপূর্ণ সূরাসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। (৪) কতিপয় কুরআনী দোয়া । (৫) কতিপয় নববী আমল। যাতেকরে জীবন চলার পথে বহু সমস্যার সমাধান একই সাথে এক কিতাবে সংক্ষিপ্ত আকারে হলেও হাতের মুঠোয় চলে আসে। অবশেষে তাঁরই অপার করুণা ।
জন্ম ও পরিবার তিনি ২৩ শে জুমাদাল উলা ১৪১১ হিজরী সন মুতাবেক ১২ ডিসেম্বর ১৯৯০ ঈসায়ী সনের রোজ বুধবার প্রায় সুবহে সাদিকের আগ মুহুর্তে মুন্সিগঞ্জ জেলাস্থ সিরাজদিখান ধানাধীন মোহাম্মদপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতাঃ মরহুম হাফেজ শরীফুল ইসলাম। দাদাঃ মরহুম হাফেজ মাওলানা রফীকুল ইসলাম। নানাঃ মরহুম হাফেজ সিরাজ উদ্দীন খাঁন। শিক্ষাজীবন দ্বীনি পাঠের প্রাতিষ্ঠানিক হাতেখড়ি হয় নিজ বাবার কাছে; ঢাকার অন্যতম খ্যাতনামা জামে মসজিদ ও বিদ্যাপিঠ জামিয়া ফোরকানিয়া ফকিরেরপুল হাফেজিয়া মাদরাসায়। এরপর উক্ত প্রতিষ্ঠানেই উস্তাযে মুহতারাম হাফেজ রুকনুজ্জামান সাহেব দা. বা.-এর কাছে ৯ বছর বয়সে ১৪২০ হিজরী মুতাবেক ১৯৯৯ ঈসায়ী সনে কালামুল্লাহ কুরআন কারীমের হিফজ সম্পন্ন করেন। ক্বেরাত প্রশিক্ষণঃ কুরআন হিফজের পাশাপাশি হাফেজ ক্বারী আবদুল আউয়াল সাহেবের কাছ থেকে ক্বারীয়ানা প্রশিক্ষণ লাভ করেন। এই সময়কালের মধ্যে বাইতুল মুকাররম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাইকোর্ট ও কাকরাইল সার্কিট হাউজ ইসলামী গ্রন্থগার ও গবেষণা কেন্দ্রসহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ক্বেরাত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বহুবার ১ম, ২য়, ৩য় স্থান অধিকার করে পুরস্কার লাভ করেন। তাছাড়া ঢাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলূম বড় কাটারা মাদরাসায় কিতাব বিভাগের প্রথম জামাআত ছালেছে পড়াকালীন সময়ে উস্তাযুল ক্বুররা হযরত মাওলানা ক্বারী হাবীবুর রহমান র.-এর কাছ থেকেও ক্বেরাত প্রশিক্ষণের সৌভাগ্য হয়। হিফজ সমাপ্ত করার পর তিনি ঢাকার ঐতিহ্যবাহী উম্মুল মাদারিস জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফুল উলূম বড় কাটারা মাদরাসায় কিতাব বিভাগের লেখাপড়ার সূচনা করেন। এরপর জামিয়া দ্বীনিয়া শামছুল উলুম (পীরজঙ্গী), জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ ও মাদরাসাতুল কাউসার আল-ইসলামিয়ায় বিভিন্ন জামাত অধ্যয়ন করে অবশেষে ঐতিহ্যবাহী জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদরাসায় ৩ বছর (জালালাইন থেকে তাকমীল) শেষে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে কৃতিত্বের সাথে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করেন। তারপর উচ্চতর ইসলামী আইন গবেষণা তথা ইফতার জন্য শেখ জনুরুদ্দীন দারুল কুরআন চৌধুরীপাড়া মাদরাসায় ভর্তি হন। কিছুদিন পর পারিবারিক সমস্যা হেতু সেখান থেকে চলে আসতে হয়। ফলে জামিয়া উসমানিয়া বাংলাদেশ হাসনাবাদ মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সাথে ইফতা সম্পন্ন করেন। বর্তমানে তিনি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এ ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে অনার্সে অধ্যয়নরত আছেন। কর্মজীবন শিক্ষাজীবন শেষে ফকিরেরপুল জামে মসজিদ-মাদরাসায় ইমামাত ও শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে খেদমত জীবনের সূচনা হয়। বর্তমানে তিনি মাদরাসাতুল হারামাইন আল-ইসলামিয়্যার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসাবে মুগদা-মান্ডায় খেদমতরত আছেন। আশুলিয়া বড়বাড়ী পুকুর পার জামে মসজিদে দীর্ঘদিন যাবৎ খতীবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। লিখন ও প্রকাশনা তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই শান্তিময় জীবনের লক্ষ্যে নবীজীর চল্লিশ হাদীস। এরপর আরও কিছু বই প্রকাশিত হয়। যেমন: আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য ইসলাম হেফাজতের কার্যকরী কর্মপন্থা অনূদিত এ পথেই সুখের ছোঁয়া হজ্জ উমরাহ ও যিয়ারাহ দাওয়াত ও তাবলীগ আমাদের পথ ও পাথেয় অনূদিত আরবাঊনা হাদীসান ফী ফাযীলাতিল কুরআন