হাতি ও পিঁপড়ের চাঁদ দেখা শীতের বিকেলে পিঠে রোদ লাগিয়ে আরাম করে শুয়ে ছিল হাতি। পাশের এক মাটির ঢিবি থেকে পিনপন নামের পিঁপড়েটি পিল পিল করে হাতির সামনে এসে বলে, কথা দিয়েছিলে চাঁদ দেখাবে। কই ডাকলে না তো। বিকেলের নরম রোদে আরামে চোখ বুজে এসেছিল হাতির, পিঁপড়ের গলা পেয়ে চোখ পিটপিট করে বলে, বলেছি যখন তখন দেখাব। আজ রাতেই দেখাব। রাতে কেন এখনই দেখাও না। আরে চাঁদ তো রাতে দেখা যায়। এই বনের সবাই যখন ঘুমায়, তখন চাঁদ চুপিচুপি আকাশের গায়ে ওঠে। হাতির কথা মতো রাতে চাঁদ দেখতে হাজির হয় পিঁপড়েটি। হাতি বলে, কী দেখ? পিনপন বলে, লাঠির মতো কিছু একটা, আবার আমগাছের মতোও মনে হয়। দাঁড়াও একটু চড়ে আসি, দেখি কোনো বাসাটাসা বানানো যায় কি না। পিঁপড়েটি হাতির পা বেয়ে ওপরে উঠে যায়। হাতি বলে, পেলে কিছু? অনেক কিছু কিছুমিছু? হাতি ভাবে মহা মুশকিলে পড়া গেল তো! এই পিঁপড়েটাকে নিয়ে চাঁদ দেখার আয়োজন করাটাই ভুল হয়েছে, তবু কথা যখন দিয়েছি, তা তো রাখতেই হবে। পিঁপড়ে বলে, বেশ মজা হচ্ছে, এখানেই বাসা বানাব ভাবছি। নেমে এসো বলছি। আমার কেমন সুড়সুড়ি লাগছে। চাঁদে আমি ঘর বানাব শুনে তোমার কি না সুড়সুড়ি লাগে, হে হে ভারি মজা তো! আরে ওটা চাঁদ নয়, ওটা আমার … উঁ উঁ বলে চিৎকার করে ওঠে হাতিটি। পিঁপড়ে বলে, চাঁদে বেশ মজা চিমটিও কাটা যায়। দেখবে এসো। আরে ওটা চাঁদ নয় ওটা আমার পা। তোমার পা! হেহে এখন বলবে তো চাঁদের তোমার পা পড়েছে। মনের দুঃখে হাতি এবার বসে পড়ল।
লেখক নাম ড. জ্যোৎস্নালিপি। কাগজে-কলমে রয়েছে ড. জ্যোৎস্না রানী বিশ্বাস। জন্ম ১১ ডিসেম্বর ১৯৭৯; কুষ্টিয়া জেলায়। তাঁর অনেকগুলো পরিচয়- সাংবাদিক, গবেষক, কথাসাহিত্যিক এবং তথ্যচিত্র নির্মাতা। কৈশোরের আঙিনা থেকেই কথাশিল্পের সঙ্গে তাঁর প্রণয়। লিটল ম্যাগাজিন দিয়ে সাহিত্যসাধনা শুরু হলেও একসময় হাজির হয়েছেন জাতীয় দৈনিকগুলোতে। সম্পাদিত লিটলম্যাগ 'ধ্রুব'। বর্তমানে সাহিত্যসহ গণমাধ্যম নিয়ে নিয়মিত লিখছেন। প্রাতিষ্ঠানিক অবস্থান থেকে বাংলা সাহিত্যে পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সাংবাদিকতায় রয়েছে তাঁর উচ্চতর ডিগ্রি। পোযছেন মোনাজাতউদ্দিন গবেষণা ও সালমা সোবহান ফেলোশিপ। ইতোমধ্যে সাংবাদিকতা বিষয়ে তাঁর তিনটি গ্রন্থ এবং গণমাধ্যমবিষয়ক প্রবন্ধ বিভিন্ন গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। দৈনিক প্রথম আলো'র ফেলো সাংবাদিক হিসেবে তাঁর সাংবাদিকতার শুরু। তারপর দৈনিক দেশবাংলা, ম্যাস-লাইন মিডিয়া সেন্টারের গণমাধ্যমবিষয়ক ত্রৈমাসিক মুক্তপ্রকাশ'র সম্পাদক, দৈনিক সংবাদ'র ফিচার সম্পাদক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রান্তজন'র নির্বাহী সম্পাদক এবং বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি)-এর সহকারী সম্পাদক হিসেবে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো-গল্পগন্থ: 'অথবা বিমূর্ত অন্তর্দাহ' (২০১১); শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ: 'রাখাল ছেলে ও সাতপরি' (২০১২); 'ভালোদাদু' (২০১৮); 'কাঠবিড়ালির বিয়ে' (২০১৮); 'চরকা কাটা বুড়ি' (২০১৮); সম্পাদনা গ্রন্থ: 'খবরের খোঁজে' (২০০৯); 'সংবাদের তালাশে' (২০১০) এবং গণমাধ্যমবিষয়ক সাংবাদিক সহায়িকা: 'নারীর ক্ষমতায়ন' (২০১৭)।