গাজীউল হক রচিত “উচ্চতর আদালতে বাংলা প্রচলন” বইটি বাংলাদেশের বিচার বিভাগে মাতৃভাষা বাংলা ব্যবহার চালুর পক্ষে একটি জোরালো যুক্তি ও আন্দোলনের প্রামাণ্য দলিল। লেখক নিজে একজন ভাষা সংগ্রামী ও সচেতন নাগরিক হিসেবে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় এবং তা বাস্তব জীবনে বিশেষ করে উচ্চ আদালতে ব্যবহার নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হয়েছেন।
বইটিতে তিনি তুলে ধরেছেন:
বাংলা ভাষার সাংবিধানিক অবস্থান: সংবিধানে বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃত হলেও, এখনো দেশের উচ্চ আদালতে তা পুরোপুরি প্রচলিত হয়নি।
আইন-আদালতে ইংরেজির আধিপত্য: বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ বিচার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে গিয়ে ভাষাগত প্রতিবন্ধকতায় পড়েন।
আদালতের রায় ও আদেশ বাংলায় হওয়া উচিত: যাতে জনগণ সরাসরি তা বুঝতে পারে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়।
আন্দোলন ও কর্মসূচি: লেখক বিভিন্ন আন্দোলনের বর্ণনা দিয়েছেন যেখানে আদালতে বাংলা চালুর জন্য সোচ্চার ভূমিকা পালন করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক উদাহরণ: বিভিন্ন দেশে কিভাবে মাতৃভাষা বা রাষ্ট্রভাষায় বিচার হয় – সে উদাহরণ দিয়ে লেখক দেখিয়েছেন যে বাংলায় বিচার চালু করাও বাস্তবসম্মত।
✍️ মূল বার্তা:
এই বইয়ের মূল বক্তব্য হলো— “ভাষা মানুষের অধিকার। বিচারও মানুষের অধিকার। কাজেই বিচারব্যবস্থায় ভাষাগত বাধা থাকা উচিত নয়। বাংলাকে উচ্চতর আদালতের ভাষা হিসেবে পুরোপুরি চালু করা সময়ের দাবি।”
পড়তে গেলে মনে হবে এটি কেবল একটি বই নয়, বরং ভাষার অধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য একটি আবেগময় আহ্বান।