পেছনে দাঁড়িয়ে তন্দ্র আফরিনকে দেখছে। আফরিন বুকসেলফের কাছে দাঁড়িয়ে কী যেন করছে। খানিক সময়ের জন্য একটু হলেও ভরকে যায় সে৷ ওইখানে তো তন্দ্রের কিছু জিনিসপত্র রাখা আছে। আফরিনকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেওয়া যাবে না। তন্দ্র উচ্চকণ্ঠে ডেকে ওঠে, “আফরিন।” আফরিনও চমকে পেছনে তাকায়। তন্দ্র ভেজা শরীরে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। গলার নিচ দিয়ে পানি বেয়ে পড়ছে৷ শরীরে তার টাওয়াল ছাড়া অবশিষ্ট আর কিছুই নেই৷ আফরিন ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার পর দেখতে পায় তন্দ্র আর তার মধ্যে সর্বোচ্চ ছয় হাত দূরত্ব। আফরিন কিছুতেই বুঝতে পারছে না এত উচ্চস্বরে ডাকার কী হলো? সে প্রশ্ন করে, “এভাবে ডাকলে কেন? আমি কি কানে কালা?” তন্দ্র সামান্য বিচলিত হলেও নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বলে, “আমি সেই কখন থেকে তোমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছি। আর তুমি বুকসেলফের দিকেই তাকিয়ে আছো। এটা তো ঠিক না?” “তুমি তো মাত্রই এলে।” “নাহ ম্যাডাম। আমি অনেকক্ষণ ধরেই দাঁড়িয়ে আছি আপনার পেছনে।” ভ্রু জোড়া কুঁচকে আফরিন বলে, “ওহ। তাহলে হয়তো খেয়াল করিনি।" তন্দ্র কিছু না বলে কাবার্ড থেকে জামাকাপড় বের করছে আর মনে মনে বলছে, হ্যাঁ, তুমি ঠিকই ধরেছ আমি মাত্রই তোমার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু তোমাকে এটা বুঝতে দেওয়া যাবে না আফরিন। আফরিন বিছানায় বসতে বসতে ভাবছে, তন্দ্র মিথ্যা কেন বলল। সে তো আয়নায় স্পষ্ট দেখতে পেল তন্দ্র এসেই তাকে ডেকেছে। তবে কেন বলল, সে আরও আগেই এসেছে। মিথ্যা বলার কারণ কী হতে পারে? নাকি বুকসেলফের কাছে দাঁড়িয়ে থাকাটা তন্দ্রকে সমস্যা করেছিল যার জন্য তন্দ্র খুব কায়দা করে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়েছে। আফরিনের কৌতুহলী চোখ তন্দ্রকে দেখতে থাকে।
“আফরোজা আক্তার"-জন্ম ৭ই ফেব্রুয়ারি। পৈতৃক নিবাস চাঁদপুর জেলায় হলেও তাঁর শৈশব কাটে একেক জায়গায়। বাবার চাকরিসূত্রে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় থাকতে হয়েছে তাঁকে। তারপর একটা সময় নিজ শহরে ফিরে আসেন আর পড়াশোনায় সমাপ্তি ঘটান চাঁদপুর সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে। লেখালেখির হাতেখড়ি রোজনামচা থেকে শুরু হলেও একটা সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখিতে প্রবেশ করেন এবং সেখান থেকেই লেখক হিসেবে তাঁর একটু-আধটু পরিচিতি। তাঁর ভাষ্যমতে, লেখক হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে তাঁকে আরও দীর্ঘ পথ হাঁটতে হবে। লেখক শব্দটা অনেক সম্মান বহন করে। সেই সম্মানটা অর্জন করা এত সহজ নয়। ভবিষ্যতে তিনি লেখালেখি নিয়ে এগিয়ে যেতে চান। "ঝরে যাওয়া বেলিফুল”-নবকথন প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখা দ্বিতীয় বই আর ব্যক্তিগত ঝুলিতে সপ্তম বই।