তাফসীরে জালালাইন একটি সমীক্ষা লেখক: শাইখ আব্দুল হামীদ আল-ফাইযী আল-মাদানী দু'টি কথা ‘তাফসীরে জালালাইন একটি সমীক্ষা' গ্রন্থটি ছাত্র শিক্ষকসহ আপামর পাঠকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত তাফসীর। অত্র গ্রন্থে সম্মানিত লেখক মূলতঃ দু'টি কাজ করেছেন। প্রথমতঃ তিনি মুফাস্সিরদ্বয়ের ভুল ধরার মতো ধৃষ্টতা দেখাননি। বরং যে তাফসীর মাদরাসার শিক্ষক-ছাত্ররা দারস-তাদরীসে অধ্যয়ন করছেন এবং এত্থেকে বহু ভুল আক্বীদা মনের ভিতরে বদ্ধমূল করে দাওয়াতী ময়দানে ছড়িয়ে দিচ্ছেন, তাদেরকেই মূলতঃ তিনি সতর্ক করার চেষ্টা করেছেন। দ্বিতীয়তঃ আক্বীদাগত ভুলগুলো যথাসাধ্য চিহ্নিত করে তার সঠিক সমাধান ও নীতিমালা উল্লেখ করে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। যেমন- মহান আল্লাহর সিফাত সংক্রান্ত আয়াতের আশআরী ফির্কার অপব্যাখ্যা । আম শব্দের খাস তাফসীর, ব্যাপকার্থবোধক শব্দের সংকীর্ণ ও সীমাবদ্ধ ব্যাখ্যা। ইসরাঈলী বর্ণনাভিত্তিক কিছু অমূলক কাহিনী প্রভৃতি। এছাড়াও আরও অনেক আপত্তিকর ত্রুটি রয়েছে যা চিহ্নিত করা শেষ হয়েছে দাবি করা দুষ্কর। ত্রুটি-বিচ্যুতির বিষয়টি যে শুধু সম্মিনিত লেখকের দৃষ্টিগোচর হয়েছে বিষয়টি এমন নয়। আরব বিশ্বের অনেক উলামায়ে কেরাম উক্ত তাফসীর গ্রন্থের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন, তাঁদের শীর্ষে রয়েছেন শায়খ ইবনে উষাইমীন, মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান আল- খামীস (রাহিমাহুল্লাহ)। তদনুরূপ সমীক্ষা লিখেছেন, শায়খ ডক্টর মুহাম্মাদ বিন লুতফী আস- স্বাব্বাগ প্রমুখ। আল্লাহ্ তা'আলার নিকট এই দু'আ করি তিনি যেন সম্মানিত মুফাস্সিরদ্বয়ের অনিচ্ছাকৃত ভুল গুলো ক্ষমা করে দেন এবং আমাদের সকলকে যেন সঠিক বিষয়টি বোঝার তাওফিক দান করেন আমীন।
.শায়খ আব্দুল হামিদ ফাইযী আল-মাদানী একজন প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ, লেখক ও অনুবাদক, যিনি বাংলা ভাষাভাষী পাঠকদের মধ্যে ইসলামী জ্ঞানের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ১৯৬৫ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আলেফ নগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিকভাবে মক্তব ও স্থানীয় স্কুলে শিক্ষা গ্রহণের পর তিনি জামেয়া রিয়াযুল উলুম ও জামেয়া ফাইযে আম থেকে ইসলামি শিক্ষা লাভ করেন। এরপর সৌদি সরকারের স্কলারশিপে তিনি মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং সেখান থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি সৌদি আরবের আল-মাজমাআহ ইসলামি সেন্টারে দাওয়াত ও তাবলিগ কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছেন। তাঁর লেখা ও অনুবাদে রচিত প্রায় ৬০টির বেশি বই রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে "আদর্শ বিবাহ ও দাম্পত্য জীবন", "জ্বীন ও শয়তান", "মহিলাদের নামাজ", "জানাযা দর্পণ", "রোজা ও রমজান", "ফাযায়েল ও রাযায়েল" অন্যতম। সহজ ভাষা, বিশুদ্ধ আক্বীদা ও প্রামাণ্য দলিল-ভিত্তিক উপস্থাপন তাঁর লেখার বিশেষ বৈশিষ্ট্য, যা তাকে বাংলা ভাষার অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামি লেখকে পরিণত করেছে।