ইবনে আরাবি’র দুটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বই হলো ‘ফুতুহাতে মাক্কিইয়া’ এবং ‘ফুসুসুল হিকাম’। প্রথমটি তিনি দীর্ঘ সময় ধরে লিখেছেন, মক্কা থেকে ফিরে আসার পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত, এবং তিনি এই বইটি কাবাঘর তাওয়াফরত অবস্থায় পান। দ্বিতীয় বইটি, ‘ফুসুস’, তিনি জীবনের শেষ সময়ে স্বপ্নে রাসূল (সা.) থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান থেকে লিখেন।
‘ফুতুহাত’ ইবনে আরাবির মতবাসমূহের বিস্তারিত ব্যাখ্যা, এবং ‘ফুসুস’ তার সারসংক্ষেপ। ইবনে আরাবির রচনায় স্বাতন্ত্র্য রয়েছে, এবং তিনি নিজস্ব কিছু পরিভাষা এবং লেখার ধরন ব্যবহার করেছেন, যা সাধারণের জন্য বোঝা সহজ হতে পারতো যদি তিনি সেগুলি ব্যবহার না করতেন।
তিনি ‘আল হাক্ক’ শব্দটি আল্লাহর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করেছেন এবং 'আল্লাহ' শব্দটি কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ব্যবহার করেছেন। ‘ন’ শব্দটি দিয়ে তিনি বস্তুগত অস্তিত্ব বা জাগতিক সত্তা বোঝাতে চান, এবং একে ‘বস্তুজগৎ’, ‘ইতঃপ্রয়োগযোগ্য জগৎ’ বা ‘সত্তা’ হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে। তিনি ‘তানযীহ’ এবং ‘তাশবিহ’ শব্দও ব্যবহার করেছেন, যার মাধ্যমে আল্লাহকে সৃষ্টির সাথে সংযোগ থেকে মুক্ত এবং বিপরীততরূপে তিনি আল্লাহর সাথে সাদৃশ্যের কথা বলেন।
এছাড়া তার শব্দভান্ডারে ‘খোয়ী হাজিরা’, ‘হুভিয়্যাহ’, ‘হায়রা’ ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। ‘হায়রা’ শব্দটি বিভ্রান্তি বোঝাতে ব্যবহার হয়েছে, যার মধ্যে একটি গভীর দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি নিহিত। তিনি বলেন, "যে ব্যক্তি দাবি করে যে সে জানে আল্লাহ তার স্রষ্টা এবং সে বিভ্রান্ত নয়, সে আসলে অজ্ঞ।"
এইভাবেই ইবনে আরাবির কাজগুলি গভীর ধ্যান এবং আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত জ্ঞানের অন্বেষণের একটি দৃষ্টান্ত
শফিক ইকবাল ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলা সদরে জন্মগ্রহণ করেন। স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাপে ভর্তি হন। সেখান থেকে সফলতার সাথে নৃবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণীতে বিএসএস ও এমএসএস সম্পন্ন করেন। শফিক ইকবাল সব ঘরানার বই অনুবাদ করতে সক্ষম। ২০২৪ সাল পর্যন্ত তার ১৯ টি অনুবাদ বই প্রকাশিত হয়েছে। তার অনুদিত কিছু উল্লেখযোগ্য বই হলো "ইবনে আরাবির সময় ও সৃষ্টিতত্ত্ব", "ফুতুহাতে মাক্কিইয়া", "অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার'স ম্যান" ইত্যাদি।