এক ছিল কাক ও ময়ূর। উভয়েই বনে বসবাস করত। একদিন ময়ূর বনের সব পশু-পাখিকে ডেকে বলল, বন্ধুরা আজ তোমাদের ডেকেছি আমার জন্মদিনের নিমন্ত্রণ করার জন্য। আজ আমার জন্মদিন, তাই আমি ঠিক করেছি আমরা নাচ-গান করব। কোকিল খুশি হয়ে বলল, খুব মজা হবে, আমি তোমাদের গান শোনাব। ময়না বলল, আমি কবিতা শোনাব। এ সময় কাক উপস্থিত। কাক আনন্দ করে বলল, ময়ূর আজ তোমার জন্মদিন? তোমার জন্মদিনে আমিও গান গাইব। কোকিল উপহাস করে বলল, তুমি শোনাবে গান! তবেই হয়েছে। তোমার যে ফাটা বাঁশের মতো গলা! সারাক্ষণ কা কা কা করো; তোমার কর্কশ ডাকে কান ঝালাপালা হয়ে যায়। আর আমাকে দেখো, আমি যখন কুহু কুহু করে গান গাই তখন সবাই মুগ্ধ হয়ে আমার গান শোনে। ময়ূর বলল, তোমাকে এখানে কে ডেকেছে? আমি তো তোমাকে নিমন্ত্রণ করিনি! তবে কেন এসেছ? এখনই এখান থেকে বেরিয়ে যাও। আর যাওয়ার সময় একটা কথা কান খুলে শুনে যাও, আমি কালো পছন্দ করি না। কাক বলল, কোকিলও তো কালো। ময়ূর বলল, কোকিল কালো হলেও ওর সুমধুর গানের গলা আছে বলে ওকে সবাই পছন্দ করে। এখন তুমি আসতে পারো। কাক যাওয়ার সময় বলল, দেখো ময়ূর, তুমি সুন্দর বলে আমাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিলে। তোমার চরম দুর্দিনে কেউ তোমার পাশে না থাকলেও আমাকে তোমার পাশে পাবে। আসি, ভালো থেকো। ভরা মজলিসে ময়ূর কাককে অপমান করে তাড়িয়ে দিল। এ সময় ধূর্ত শিয়াল বলল, আরে ময়ূর শুনলাম আজ তোমার জন্মদিন, তাই চলে এলাম। ময়ূর খুশি হয়ে শিয়ালকে সাদরে বসতে দিল। শিয়াল বলল, আমি তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড আর তুমিই আমাকে নিমন্ত্রণ করলে না!
সাধনা সারগাম। তরুণ কথাসাহিত্যিক ও শিশু সাহিত্যিক। তিনি পাবনা সদর উপজেলার হিমায়েতপুরে ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা আব্দুল ওয়ারেছ সালাফী ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী। মাতা মোছা. হুরজাহান বেগম। সাধনা সারগাম জীবন সংগ্রামে লড়াকু একজন মানুষ। ছোটবেলা থেকেই তিনি দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় লিখছেন। তার লেখায় উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ, মাদক ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা ও প্রতিবাদমূলক লেখা। বিবিএ, এমবিএ পাশ সাধনা সারগাম পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত। ইতোপূর্বে তার ‘নির্জন প্রান্তরে একাকী’ ‘এখনো মধ্যরাত’ নামে দুটি উপন্যাস ও ‘মায়ের ভালোবাসা’ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছিল। ‘বাঘ ও সাহসী মশা’ সাধনা সারগামের চতুর্থ প্রকাশিত গ্রন্থ। লেখালেখির জন্য সাধনা সারগাম ‘সাহিত্য সম্মেলন ২০২২’-এ পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে ‘শুভেচ্ছা স্মারক’ পান।