বেগম রাজিয়া হোসাইন। জন্ম ১৯৩৬ সালের ২ জানুয়ারি। কিশোরগঞ্জের শ্যামল গ্রাম দুর্গাপুরে। গুরুদয়াল কলেজের প্রথম মুসলিম নারী গ্রাজুয়েট বেগম রাজিয়া হোসাইন পড়াশোনার জন্য পাড়ি দিয়েছেন লড়াই-সংগ্রামের বন্ধুর পথ। ময়মনসিংহ উইমেন টিচার্স ট্রেইনিং কলেজ থেকে বিএড। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর।
দীর্ঘ বিশ বছর শিক্ষকতা করেছেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে রাজশাহী, বরিশাল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে উচ্চপদে বহুমুখী দায়িত্ব পালন শেষে অবসর নিয়েছেন। নারী শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষার প্রসারে তাঁর তৎপরতা ও অবদান দিয়েছেন সর্বজনবিদিত। নেতৃত্ব বাংলাদেশ মহিলা সমিতি ও জাতীয় মহিলা সংস্থাসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংগঠনে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক থাকাকালে স্বাধীনতার পক্ষে অত্যন্ত কৌশলে তথ্য সমন্বয় করেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গেরিলাদের আশ্রয় দিয়েছেন। বাঙালির বিজয়ের প্রাক্কালে পাকবাহিনীর হাতে নিগৃহীত নারীদেরকে উদ্ধার করে তাদের পরিবারে পুনর্বাসনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন।
পাকিস্তান আমলে প্রাপ্ত স্টার অব পাকিস্তান পদক প্রত্যাখ্যান করেছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। স্বাধীন বাংলাদেশে শিক্ষা, সাহিত্য ও সমাজকর্মে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বেগম রোকেয়া পদক (২০০৯), মেডেল অব মেরিট (১৯৯৫)
এবং কবি জসিম উদ্দীন স্বর্ণপদকসহ [১৯৯০] পেয়েছেন প্রায় ৩৫টি পুরস্কার ও সম্মাননা।
কবিতা, কথাসাহিত্য, গান, প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং শিশুতোষ রচনায় পারদর্শী এই লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পঞ্চাশেরও অধিক।