ফ্ল্যাপে লিখা কথা ছোটদের সাহিত্য ও ভাবজগৎ নিয়ে মেতে আছেন এখলাসাউদ্দিন আহমদ। সম্পাদনা করেছেন এ দেশের সবচেয়ে উজ্জ্বল কিশোর-সাময়িকী এবং বিভিন্ন তাৎপর্যময় সঙ্কলন ,সর্বোপরি চার দশকেরও বেশিকাল ধরে লিখে চলেছেন নানা ধরনের গদ্য-পদ্য। তাঁর রচিত গল্প উপন্যাসের মধ্যে নির্বাচিত দশটি নিয়ে প্রকাশিত হলো বর্তমান গ্রন্থ, দু্ই মলাটের মধ্যে যা ধারণ করেছে সমসাময়িককালের প্রধান এক লেখকের সেরা রচনাসমূহ। এখলাসউদ্দিন আহমদের গদ্যরচনার এক বৈশিষ্ট্য, মানবজগৎ ও প্রাণিজগৎ সেখানে একাকার হয়ে যায়। বাঘ, বেড়াল,কাক কিংবা ইঁদুর , সবাই তাদের সহজিয় ভঙ্গি নিয়ে অনায়োসে অংশী হয়ে পড়ে বাস্তব জীবনের । শিশু-সাহিত্যেরি এই বৈশিষ্ট্য সার্বজনীন,বিশ্বসাহিত্যের অনেক স্মরনীয় চরিত্র এভাবেই সৃষ্টি হয়েছে ,বাংলায় তেমন উদাহারণ অবশ্য বেশি নেই । তেব এই ঘরানার অনন্য রূপকার নি:সন্দেহে এখলাসউদ্দিন আহমদ, তাঁর কেঁদো বাঘ,ভুষণ্ডির কাক, পা-ভাঙ্গা ব্যাঙ কিংবা নেংটি তো হয়ে উঠেছে অনেক চেনা চরিত্র, তারা যেমন তুনুর কাছে মেলে দেয় মনের সব কথা, সেসব শুনতে শুনতে আমারও তো তুনুর মতো নিত্যকার জগৎ থেকে চলে যাই অনেক দূরে ,চির চেনা বাস্তবতার দিকে ফিরে তাকিয়ে তখন আবার যেন নতুন করে চিনে নেই নিজেকে। ছোটদের জন্য লেখা অসাধারণ এমনি সব গল্প-উপন্যাস থেকে বাছাই করে নিবেদিত হলো বর্তমান গ্রন্থ, ছোটদেরতো বটেই, বড়দেরও মন জয় করবে এই সঙ্কলন,পাশাপাশি তাদের ভাবিয়ে তুলবে,অন্তত কিছুটাও হলেও। সার্থক শিশুসাহিত্য তো ঠিক কাজটিই করে থাকে।
এখলাসউদ্দিন আহমদ জন্ম ১৯৪০ ভারতের কলকাতায়। বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাস করেন। একসময়ে কিশোরদের জন্যে মাসিক পত্রিকা 'টাপুরটুপুর' সম্পাদনা করে সাড়া জাগিয়েছিলেন। শিশুসাহিত্যই তাঁর বিচরণের একমাত্র ক্ষেত্র। ১৯৬২ সালে পশ্চিমবঙ্গ যুব উৎসব পুরস্কার, ১৯৭১ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার ১৯৮৩ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৬ সালে অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৯ সালে শিশু একাডেমী পুরস্কার ও একুশে পদক পেয়েছেন। এক যে ছিল নেংটি, হঠাৎ রাজার খামখেয়ালী, কাটুম কুটুম, ফিরে দেখা, ছোট্ট রঙিন পাখি ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।