রবীন্দ্রনাথ বাংলা ছোটগল্পকে সংকীর্ণ গলি থেকে রাজপথে নিয়ে গেছেন। এই পথ ধরে অনায়াসে বিশ্বসাহিত্যে প্রবেশ করা যায়। তিনি এই রাজপথের সাহসী পথিকমাত্র নন, এই পথও তিনি নিজেই সৃষ্টি করেছেন। সুধীন্দ্রনাথ দত্ত বলেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথ হাল বাংলার সিদ্ধিদাতা গণেশ’। তাই ‘আমাদের দ্বারা রবীন্দ্রনাথের মূল্য-নিরূপণ গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজার চেয়েও হাস্যকর।’ তাই রবীন্দ্রগল্পের মূল্যায়নের চেয়ে গল্পপাঠের আনন্দ ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতেই আমরা অধিকতর আগ্রহী। ছোটগল্পের কারিগর হিসেবে রবীন্দ্রনাথকে প্রণতি জানিয়ে গল্পপাঠে অগ্রসর হলে তাঁর কাছে আমাদের ঋণের মাত্রা বাড়তেই থাকে। তাঁর ছোটগল্পকে ‘বাংলা সাহিত্যের, বাঙালি জীবনের পরিপ্রেড়্গিতে’ বিবেচনা করলে তাতে দেশকালের নানা চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যাবে, কিন্তু এই মহৎ ব্যক্তিপ্রতিভার প্রাণের স্পর্শে তা সর্বযুগের সর্বমানবের আনন্দ-বেদনাকে ধারণ করে কালোত্তীর্ণ শিল্পসম্পদে পরিণত হয়েছে। আমাদের প্রতিদিনের জীবনের বিবিধ ঘটনা দুর্ঘটনা অভাব অভিযোগ আড়্গেপ ও আনন্দের সহস্র বিস্মৃতরাশি থেকে সামান্য কিছু অশ্রজলের সন্নিবেশ ঘটিয়ে তিনি জীবনকে অসামান্য ব্যঞ্জনায় উপস্থাপন করেছেন। রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের পাঠক হিসেবে এবং বিশেষভাবে বাঙালি হিসেবে আমরা তাঁর প্রতি প্রণত হই। কিন্তু কোথায় প্রণতি জানাবো আমরা? রবীন্দ্রনাথের পায়ের পাতা তো সবখানে পাতা। গল্পপাঠের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথকে জানার চেষ্টায় আমরা প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশের হৃদয়কেই স্পর্শ করতে পারবো। সেখানেই তাঁর সৃষ্টিকর্মের সার্থকতা এবং আমাদের মুক্তি নিহিত। পৃথিবী বদলে যাচ্ছে। এই পরিবর্তমান পৃথিবীকে পাঠ করার প্রণোদনা আমরা রবীন্দ্রনাথ থেকেই লাভ করছি। রবীন্দ্রনাথের অন্যান্য সাহিত্যকর্মের মতোই তাঁর ছোটগল্পের শরণ নিলেও তিনি আরো অবাধ ও অকৃত্রিমভাবে আমাদের লোক হয়ে উঠবেন।
Rabindranath Tagore was a Nobel Laureate for Literature (1913) as well as one of India’s greatest poets and the composer of independent India’s national anthem, as well as that of Bangladesh. He wrote successfully in all literary genres, but was first and foremost a poet, publishing more than 50 volumes of poetry. He was a Bengali writer who was born in Calcutta and later traveled around the world. He was knighted in 1915, but gave up his knighthood after the massacre of demonstrators in India in 1919.