ইন্টারনেট ও ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কেন্দ্র করে নতুন ধরনের কর্তৃত্ববাদী ও নজরদারি পুঁজিবাদী তৎপরতার বিকাশ ঘটছে। তথ্য প্রবাহের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি এখন কেবল কোনো কিছু ব্লক বা বন্ধ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; ইন্টারনেট মাধ্যমের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগিয়ে জনগণের চিন্তার উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েমের জন্য পরিকল্পিতভাবে জনগণকে নানান অগুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে ব্যস্ত রাখা, সরকারি বক্তব্য বা অবস্থানকে নিরপেক্ষ মতামত বা সংবাদ হিসেবে প্রচার করা, ভাড়াটে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি বহুরকম তৎপরতা চালানো হয়।
অন্যদিকে, সরকারি কর্তৃত্ববাদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমভিত্তিক গ্লোবাল কর্পোরেশনগুলোর জন্ম ও বিকাশ, সেগুলো আবার ডিজিটাল সেবার বিনিময়ে কোটি কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য অবাধে সংগ্রহ করা এবং সেই তথ্যকে মানুষের আচার-আচরণ অনুমান ও প্রভাবিত করার কারবারে লিপ্ত। কাজেই স্বাধীন চিন্তা ও তৎপরতার জায়গা থেকে সরকারি কর্তৃত্ববাদ আর বহুজাতিক নজরদারি পুঁজিবাদ— উভয় প্রপঞ্চের সাথেই বোঝাপড়া ও মোকাবিলা করা জরুরি। বাংলাদেশের অনলাইন অ্যাক্টিভিজম, রাজনৈতিক পরিমণ্ডল ও বিদ্যায়তনিক জগতে ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদ ও নজরদারি পুঁজির সাম্প্রতিক এসব প্রবণতা নিয়ে বোঝাপড়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এই অনুবাদ সংকলনটি।
Title
ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদ, নজরদারি পুঁজিবাদ ও মানুষের স্বাধীন ইচ্ছার ভবিষ্যৎ
কল্লোল মোস্তফা একজন লেখক ও অনুবাদক। উন্নয়ন অর্থনীতি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবেশ, প্রযুক্তি ও শ্রম-অধিকার বিষয়ে নিয়মিত লেখালেখি, গবেষণা ও অনুবাদ করেন। তিনি 'প্রথম আলো' ও 'ডেইলি স্টার'-এ নিয়মিত কলাম লেখেন; পাশাপাশি ত্রৈমাসিক 'সর্বজনকথা'র নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে: 'বাংলাদেশ: উন্নয়নের রাজনৈতিক অর্থনীতি' (সংহতি, ২০২১); যৌথভাবে সম্পাদিত গ্রন্থ 'পারমাণবিক বিদ্যুৎ: বাংলাদেশে রূপপুর প্রকল্প ও বিশ্ব অভিজ্ঞতা' (ইউপিএল, ২০২৩) এবং অনুবাদ সংকলন 'কর্তৃত্ববাদ, আধিপত্য ও মুক্তির দিশা: বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা' (সংহতি, ২০২০) ও 'ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদ, নজরদারি পুঁজিবাদ ও মানুষের স্বাধীন ইচ্ছার ভবিষ্যৎ' (আদর্শ, ২০২৩)।