Our User Product Reviews

বইটাতে লেখক হিন্দু ধর্মের ইতিহাস সম্পর্কে একটা সুন্দর ধারনা দিয়েছেন । ইতিহাস নিয়ে আগ্রহী লেখক পড়ে আনন্দ পাবেন।

বইটি পড়ে মনে হলো লেখকের একান্ত নিজের চিন্তা বা মতামত প্রকাশ করেছেন।

অসাধারণ একটি বই । হিন্দু ধর্মের বিবর্তন সংক্ষিপ্ত এবং সুচারুরূপে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছে। যারা খুব সহজে হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে জানতে চান তাদের জন্য এর থেকে ভালো বই আর বাজারে হয়তো পাওয়া যাবে না। লেখার মান খুবই ভালো যুক্তিপূর্ণ সংক্ষিপ্ত সাবলীল উপস্থাপন । তাই বইটি কিনে কেউ হতাশ হবেন না যদি না সে বর্ণবাদী ব্রাহ্মণ হন।

wow

বইটি পড়লাম। এখানে লেখক একান্তই নিজস্ব মতামত তুলে ধরেছেন। হিন্দুধর্মকে আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমে না বুঝেই শুধুমাত্র বাহ্যিক দৃষ্টিকোন থেকে নিজের ইচ্ছামতোই লিখে গেছেন।

ড. আর. এম দেবনাথের "সিন্ধু থেকে হিন্দু" বইটা পড়লাম। মনে হলোনা এটা কোন তাঁর নিজস্ব গবেষণা গ্রন্থ। অনেকগুলো লেখক লেখিকার উক্তি আর সেই অনুসারে তাঁর নিজের ধারণা মিশিয়ে লেখা বই বলেই মনে হল। কোন কোন ক্ষেত্রে বইয়ের দুই যায়গায় পরস্পর বিরোধী মতও পেয়েছি। যেমন - এক জায়গায় লিখলেন আর্যরা কৃষিতে পারদর্শী ছিল আরেক জায়গায় লিখছেন ছিল না। এক জায়গায় লিখছেন গীতার জাতপ্রথা কর্ম অনুসারে আরেক জায়গায় লিখছেন গীতা জন্মভিত্তিক বর্ণপ্রথা সমর্থন করে। তাছাড়াও বিভিন্ন অসংগতি রয়েছে। যেমন - তিনি বলছেন ব্রাহ্মণরা শিব কেন্দ্রিক শৈব ধর্মকে দমিয়ে ফেলার জন্য রামপ্রসাদ, রামকৃষ্ণদেের দিয়ে শাক্ত ধর্মের জাগারণ ঘটিয়েছেন। অথচ এই দুইজন লোক নিজস্ব নিষ্ঠা আর সাধনায় জগতে আলোকিত হয়েছিলেন, সমাজের বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে সমাজ সংস্কার করেছেন। যাই হোক, এই বই থেকে একটা আইডিয়া পেলাম কি করে আর্য ধর্ম প্রাচীন অস্ট্রিক আর দ্রাবিড় জনগোষ্ঠীর প্রভাবে পরিবর্তিত হয়ে ঋক বেদের দেবতাদের হারিয়ে অন-আর্য ও প্রাক আর্য দেবতাদের গ্রহণ করল। আরো একটা বিষয় পরিষ্কার হল। বাংলায় আসলে ব্রাহ্মণ ও শুদ্র ছাড়া আর কোন জাত নেই। ব্রাহ্মণরা বঙ্গে এসেছিল সবার শেষে। তারা কায়স্থ নামে এক শঙ্কর জাতি নিয়ে এসেছিল। পরবর্তীতে এই কায়স্থ সম্প্রদায়ে আরো অনেকে যুক্ত হয়েছিল এবং বাংলার আদিবাসী, কোল, ডোম, মেথর সম্প্রদায়কে সমাজের সর্বনিম্ন স্তরে পাঠিয়ে দেয়। তাছাড়া পূর্ব বঙ্গে মধ্যযুগে মীননাথ কতৃক সৃষ্ট নাথ ধর্মের লোকেরাও পরবর্তীতে হিন্দু জাত প্রথার একেবারে প্রান্থে ঠাঁই পায়। এই নাথ ধর্ম বৌদ্ধ প্রভাবিত শৈব ধর্ম ছিল যেখানে জাতপ্রথার ঠাঁই ছিল না। এদের কয়েকজন গুরু লুউপা, কাহ্নুপা প্রমুখেরা আদি বাংলা ভাষায় চর্যাপদের গান লিখেন। এই ধর্মের প্রভাব উত্তর ভারত হয়ে তৎকালীন আফগানিস্তান পর্যন্ত ছিল। বৌদ্ধ ধর্মের পতনের পর রচিত মনু সংহিতা, এবং বাংলার বৃহদর্মপুরান সহ অন্যান্য কুলজি গ্রন্থ দিয়ে আপাত জাতপাতবিহীন বাংলায় জাতপাত বিভাজন এবং বনিক শ্রেণীর লোকদের মিথ্যা শাস্ত্রীয় বচন দিয়ে সমুদ্র পথে যাত্রা বন্ধ করে দেয়াই বাংলায় হিন্দুদের পতনের প্রধান কারণ। আর এসবের পিছনে সেন আমলে ব্রাহ্মণদের উত্থান ও ব্রাহ্মণদের লেজুড় তথাকথিত উঁচু সম্প্রদায় দায়ী।