প্রিয়নাথ জোয়ারদার ভূতের ভয় পেতেন ছোটবেলা থেকেই। সেই ভয় থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তিনি কম চেষ্টা করেননি। অবশেষে এক সন্ন্যাসীর কাছে খুঁজে পেলেন ভূতের ভয় কাটানোর মহামন্ত্র। মনপ্রাণ দিয়ে ভূতের খোঁজ করে বেড়ালেই ভূতের ভয় কেটে যাবে। সেই থেকে ভূতের খোঁজ শুরু। অশরীরী, অলৌকিক, প্রেত, পিশাচ, অপদেবতা নিয়ে চর্চা চলতে লাগল দিনের পর দিন। এরই মধ্যে কখন যেন প্রিয়নাথ নামটা বদলে হয়ে গেল ভূতনাথ। ভূতনাথের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে অলৌকিক-অতিলৌকিক ঘটনার কোনও শেষ নেই। সেই ঝুলি থেকেই নির্বাচিত দশটি শিহরন-জাগানো কাহিনি এই বইয়ে তুলে ধরেছেন লেখক। উপন্যাসটির কথায় আসি। দেখা যায় না, শোনা যায়-নাকি শোনা যায় না, দেখা যায়? নাকি দুটোই? এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ভূতশিকারি প্রিয়নাথ জোয়ারদার ছুটলেন চপলকেতু গ্রামে। রহস্যের শুরু 'রেনবো' চ্যানেলের একটা টেলিসিরিয়াল নিয়ে, যার নাম 'তেনারা যেখানে আছেন'। 'রেনবো' চ্যানেলের সাংবাদিক মিংকি তেওয়ারি, তৃষ্ণা আর ক্যামেরাম্যান বিনোদকুমারের সঙ্গে ভূতনাথ চপলকেতু গ্রামের দিকে রওনা হলেন। তার পর থেকেই শুরু হল ভয়ংকর সব ব্যাপার-স্যাপার। চপলকেতু থেকে আচমকা উধাও হয়ে যাওয়া মানুষজন যাচ্ছে কোথায়? পুকুরের জল হঠাৎ-হঠাৎ দুলে ওঠে কেন? এই বইয়ে রয়েছে দশটি গল্প, একটি উপন্যাস। প্রতিটি বিষয়-বৈচিত্র্যে অনন্য, আর প্রতিটি কাহিনিতেই রয়েছে চুম্বকের তীব্র টান। এ-কথা হলফ করে বলা যায়, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে এত নিষ্ঠাভরে প্রাপ্তমনস্ক ভৌতিক কাহিনি আর কেউ বোধহয় আমাদের উপহার দেননি।
অনীশ দেব জন্ম ২২ অক্টোবর ১৯৫১, কলকাতায়। স্কুলের পড়াশোনাঃ হিন্দু স্কুল। সাম্মানিক পদার্থবিজ্ঞানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক এবং ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে বি. টেক, এম.টেক. ও পিএইচ.ডি.। পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি স্বর্ণপদক ও একটি রৌপ্যপদক। কর্মজীবনে ১৯৮৩ সাল থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে লেকচারার। ১৯৯০ থেকে ওই বিভাগেই রিডার, আর ১৯৯৮ থেকে প্রফেসার। লেখালেখির শুরু ১৯৬৮-তে, অধুনালুপ্ত ‘মাসিক রহস্য পত্রিকায়। প্রকাশিত কয়েকটি গল্পগ্রন্থঃ অনীশের সেরা ১০১, অশরীরী ভয়ংকর, দেখা যায় না শোনা যায়, তেইশ ঘণ্টা ষাট মিনিট, ষাট মিনিট তেইশ ঘণ্টা, বারোটি রহস্য উপন্যাস, পাঁচটি রহস্য উপন্যাস, ভয়পাতাল, কিশোর কল্পবিজ্ঞান সমগ্র, বিশ্বের সেরা ভয়ংকর ভূতের গল্প, ভৌতিক অলৌকিক, সেরা সায়েন্স ফিকশন সমগ্র ইত্যাদি। জনপ্রিয়-বিজ্ঞান গ্রন্থঃ বিজ্ঞানের হরেকরকম, সহজ কথায় ইন্টারনেট, কেমন করে কাজ করে যন্ত্র, রোমাঞ্চকর ধূমকেতু ইত্যাদি। প্রধান নেশা ও রহস্য-গোয়েন্দা, অলৌকিক ও কল্পবিজ্ঞান কাহিনি লেখালেখি, জনপ্রিয় বিজ্ঞানচর্চা, বিজ্ঞান গবেষণা এবং কম্পিউটার। পুরস্কারঃ প্রাচীন কলাকেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৮), ড. জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ জাতীয় পুরস্কার (১৯৯৯), পাই নিয়ে রূপকথা বইয়ের জন্য দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহ দাস পুরস্কার (২০১২) ও দীনেশচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার (২০১৩)। সম্পাদনা করেছেন অল্পকালজীবী কয়েকটি মাসিক পত্রিকা ও বিমল করের ‘গল্পপত্র’ পত্রিকার বিশেষ কল্পবিজ্ঞান সংখ্যা।