বাংলাদেশ ঋতু বদলের দেশ। সময়ের সাথে সাথে একেক ঋতুতে এদেশের রূপ বৈচিত্রে আসে ভিন্নমাত্রা। কখনো প্রখর তাপে জ্বলজ্বলে সূর্য, কখনো আবার মুষলধারে বৃষ্টি। কখনো নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় ভেসে বেড়ায় কাশ ফুলেরা, কখনো পাকা ধানের মিষ্টি সুবাস ছড়ায়। কখনো কুয়াশার চাদরে মুড়ি দিয়ে শীত আসে বাংলাদেশে, আবার কখনো কোকিলের কুহু কুহু তানে সুর মিলিয়ে আমরাও গাই বসন্তের গান। প্রকৃতির এই পরিবর্তনশীল রূপের মতো মানুষের মনের ভাবেও আসে পরিবর্তন। কখনো হাসি আনন্দ, আবার কখনো দুঃখ-বেদনা। কখনো রাগ অভিমান, আবার কখনো ক্ষমা প্রেম। মানুষের মনের ভিতর গড়ে ওঠে প্রাচীন কিংবা নতুন কোন শহর। আবার কখনো গড়ে ওঠে চিরচেনা সবুজ কোন গ্রাম, যেখানে বিস্তীর্ণ ধান খেত, তার পাশে ছোট্ট গ্রাম, এই গ্রামেরই পাশে বয়ে চলে মন ভোলানো কোন নদী। মানুষের মনেও চলে ঋতুবৈচিত্রের খেলা। বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশ আর বৈচিত্র্যময় মানুষের মন এ দুটোই আমার খুব প্রিয় বিষয়। কোন কোন কবিতায় এই দুটো বিষয় একেবারে মিলে একাকার হয়ে গেছে। কখনো আমি চলে গেছি পাবনার চাটমোহরে বিস্তীর্ণ বিলের ওপর চাষ করা সরষে খেতে, আবার কখনো মান্নান নগর দিয়ে যাবার পথে গুমানী নদীর পাশে দাঁড়িয়েছি শরতের ফুরফুরে বাতাসে। কখনো ঢাকার অদূরে নবাবগঞ্জের পাশ দিয়ে বয়ে চলা ইছামতি নদীর বুকে পানকৌড়ির খেলা দেখেছি। কখনো শুনেছি চট্টগ্রামে আগুনে দগ্ধ মানুষের আর্তচিৎকার।