মানবসভ্যতা যে উল্টো পথে যাত্রা শুরু করেছে, তার অকাট্য প্রমাণ হলো সমকামিতাবাদের বৈশ্বিক প্রসার। বিশ্বব্যাপী নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আমূল পরিবর্তন ঘটলেও আমরা এর গভীরতা সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারছি না, এমনকি এ বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট ধারণাও গড়ে ওঠেনি।
এলজিবিটি সম্পর্কে কিছু বিচ্ছিন্ন ও আংশিক তথ্য-উপাত্ত কেউ কেউ জানেন; তবে তা অনেকটাই অন্ধের হাতি দেখার মতো। এমন সংকটময় শূন্যতা পূরণের তাগিদে এলজিবিটি মতবাদের পুরো বিষয়টিকে সুনিপুণভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে শক্তিশালী রেফারেন্সসমৃদ্ধ এই বইটিতে।
রেফারেন্স হিসেবে বইটিতে যেসব জার্নাল নিবন্ধ, স্ক্রিনশট, এবং প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, গুগল সার্চের মাধ্যমে সেগুলো যাচাই করা সম্ভব। গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও এবং রেফারেন্সের পিডিএফ কপির QR কোড যুক্ত করা হয়েছে, যা সরাসরি ইউটিউব বা গুগল ড্রাইভ লিঙ্কে নিয়ে যাবে।
এ বইটি পড়ে জানা যাবে—সমকামিতা কি অধিকার? সমকামিতাকে অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলে দেশের সিস্টেম (পলিসি, আইন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য) কীভাবে বদলে যায়? সমকামিতার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কী? কেন এবং কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, এনজিও এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে এটি বৈশ্বিক এজেন্ডায় পরিণত হলো? সমকামিতা-বান্ধব বিশ্ব গড়তে কারা অর্থায়ন করছে? পরিবার ও সমাজবিরোধী এবং স্বাস্থ্যগত ক্ষতিকর প্রভাব সত্ত্বেও এই আন্দোলন প্রচারের পেছনের মূল অনুপ্রেরণা কী? বাংলাদেশে সমকামী অধিকার আন্দোলনের সূচনা কবে? কারা এর নেতৃত্ব দিচ্ছে? এবং এ পর্যন্ত কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে?
ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন ১৯৭৬ সালে জামালপুর জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামে (ঘোষেরপাড়া, মেলান্দহ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি গত ২৪ বছরের অধিক সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা এবং বায়োমেডিক্যাল ও জনস্বাস্থ্য সেক্টরে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রোবায়োলজি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ড. হোসেন National University of Singapore-এ পিএইচডি গবেষণা সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি DUKE-NUS Graduate Medical School এবং Singapore Cancer Centre-এ পোস্টডক্টরাল রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করেন। প্রবাসে এক যুগের বেশী সময়ের রিসার্চ ট্রেইনিং শেষে তিনি বাংলাদেশে ফিরে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। এরপর তিনি ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে বায়োটেক ডিভিশনের সিনিয়র ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর স্কুল অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড লাইফ সায়েন্স-ডিসিপ্লিনে সহযোগী অধ্যাপক। ইউনিভার্সিটি অব ওলংগং (অস্ট্রেলিয়া)-এ অনারারী সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে জড়িত আছেন। ড. হোসেন গত ১২ বছর ধরে থ্যালাসেমিয়া, শিশুদের স্থূলতা, ডেঙ্গু, এবং ক্যান্সারের মতো অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর প্রতিরোধ নিয়ে গবেষণা করছেন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ, এবং সামাজিক মূল্যবোধ বিষয়ে তিনি গত ২৮ বছর ধরে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছেন। করোনা মহামারির সময় তিনি জনপ্রিয় গণমাধ্যম এবং টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিনির্ধারণ আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ড. হোসেন তিনটি বইয়ের লেখক: ‘সন্তান প্রতিপালনে এ যুগের চ্যালেঞ্জ’, ‘বিসিএস নাকি বিদেশে উচ্চশিক্ষা?’ এবং ‘সমতার আড়ালে সমকামিতা মিশন’।