রমযান বছরের সবচেয়ে ফযিলতপূর্ণ মাস। এ মাস ইবাদত-বন্দেগির বসন্তকাল। এ মাসেই মানবতার মুক্তির সনদ কুরআনুল কারীম লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে নাযিল হয়। এ মাসেই হেরা গুহায় প্রিয় নবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি ওহি নাযিলের ধারা শুরু হয়। এ মাসেই রয়েছে বছরের শ্রেষ্ঠতম রজনী লাইলাতুল কদর। কুরআনুল কারীমে একমাত্র যে মাসের নাম ও মর্যাদা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, তা হলো রমযান। এ মাসে রহমতের দুয়ার উন্মুক্ত করা হয়, শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং জান্নাতের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়। রমযান শুরু হলে একজন ফেরেশতা ঘোষণা করেন-‘হে কল্যাণ-প্রত্যাশী, কল্যাণের পথে অগ্রসর হও। হে মন্দ পথের যাত্রী, থামো।’ একটি মাসকে ঘিরে এতসব ঐশী আয়োজনের মূল লক্ষ্য হলো-যেন প্রত্যেক মুমিন এ মাসে ইবাদত-বন্দেগিতে অধিক মগ্ন হয় এবং নেক আমলের মাধ্যমে মহান রবের নৈকট্য অর্জন করে।
ব্যবসায়ীদের ব্যবসার যেমন বিশেষ বিশেষ মৌসুম থাকে, সারা বছরের ঘাটতি তারা মৌসুম এলে পুষিয়ে নেয়, ঈমানদারেরও তেমন আমলের ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার মৌসুম আছে। সেই মৌসুমে তারা সারা বছরের আমলের ঘাটতি পুষিয়ে নেয়। সেই মৌসুম হলো রমযান। এজন্য রমযানকে ইবাদতের ভরা বসন্ত বলা হয়।
রমযানের ইবাদত-সাধনাকে সফল ও সার্থক করার পূর্বশর্ত হলো রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো ও নির্দেশিত আমলের পূর্ণ অনুকরণ। ‘মাহে রমযানের ২৭ আমল’ বইটির মাধ্যমে শায়খ আহমাদুল্লাহ এমন কিছু আমল তুলে ধরছেন, যা রমযানের বিশেষ আমল হিসেবে কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। এসব আমলের যথাযথ চর্চা সবার রমযান-সাধনাকে সার্থক ও মহিমান্বিত করবে
শায়খ আহমাদুল্লাহ একজন সুপরিচিত ইসলামী বক্তা। তিনি ১৯৮১ সালের ১৫ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুরের বশিকপুরে জন্মগ্রহণ করেন।প্রাথমিক শিক্ষা বশিকপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হন। কয়েক বছর নোয়াখালীর কয়েকটি মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করার পর তিনি হাতিয়ার ফয়জুল উলূম মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে কিংবদন্তি আলেম দ্বীন মুফতি সাইফুল ইসলাম (রহ.)-এর সান্নিধ্য ও ছাত্রত্ব লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরপর দেশের বৃহত্তম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরায় ভর্তি হন। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) (সানুবিয়া) উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১০ তম স্থান, স্নাতক (ফজিলত) ৩য় স্থান এবং ২০০১ দাওরায়ে হাদীসে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ২য় স্থান অর্জন করেছে। দাওরায় হাদিস শেষ করে খুলনা দারুল উলূম থেকে ইফতা সম্পন্ন করেন। তিনি একজন ইসলামিক স্কলার যিনি কোরআন ও হাদিস নিয়ে গবেষণা করেন। শায়খ আহমাদুল্লাহ বিভিন্ন বিষয়ে শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে ইসলামী সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর কাজগুলি ইসলামী বিশ্বাসের প্রতি তাঁর দক্ষতা এবং নিবেদন প্রদর্শন করে। তিনি ইসলামী সম্প্রদায়ের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন এবং তার কাজের মাধ্যমে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার বিস্তার চালিয়ে যাচ্ছেন।